UBIRUNGIA - SONAMIKA
UBIRUNGIA

আমার নাচ শুরু করার ইমোশনাল কাহিনী | আমার সম্পর্কে সব লিখলাম – UBIRUNGIA MEANING


হ্যালো! বন্ধুরা ubirungia website এ আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই। আজ আমি ” আমার নাচ শুরু করার ইমোশনাল কাহিনী ” নিয়ে এসেছি তোমাদের কাছে। চেষ্টা করেছি, আমার সম্পর্কে সব কিছু জানাতে । তোমরা অনেক দিন থেকেই আমার চ্যানেল ভিসিট করছো ইউটুবে। কিন্তু অনেকেই হয়তো আমার নামটিও জানো না ঠিক ভাবে। তো, সবার প্রথমেই আমার পরিচয় দিয়ে দি।

UBIRUNGIA - SONAMIKA
UBIRUNGIA

UBIRUNGIA MEANING :-

আমার নাম সোনামিকা – SONAMIKA। আর আমার ডাকনাম সোনা, তুতুন, রুঙ্গিয়া। যে যা নামে ডাকে আর কি।

আমাদের চ্যানেলে আমরা দুজন ই সব কাজ করি করি। আমি আর সুবীর। ওকে আমি ইউবি বলেই ডাকি প্রথম থেকেই। তো এখন আশা করি বুঝতেই পাচ্ছো আমাদের চ্যানেল এর নাম কেন ইউবিরুঙ্গিয়া। একচুয়ালি প্রথমে তো এতো টা ভেবে নাম দিই নি চ্যানেল এর। পরে তোমরা অনেকেই জিজ্ঞেস করেছো চ্যানেল এর এমন টা নাম কেন, WHO IS UBIRUNGIA ; কিন্তু হয়তো তোমাদের তখন ঠিক করে বলে উঠতে পাইনি।

আমার বাড়ি কোথায়?

তোমাদের আরেকটি প্রশ্ন অনেক এসেছে যে আমি কোথায় থাকি। আমার বাড়ি কোথায়? আমি অনেক বার এর উত্তর ও দিয়েছি। কিন্তু হয়তো তোমরা সবাই দেখোনি সেটা। তাই আবারো জিজ্ঞেস করেছো। বেসিক্যালি আমি কোচবিহার এর মেয়ে। হ্যা, কোচবিহার, রাজার শহর। আমার প্রিয় রাজবাড়ী এখানেই। ছোটবেলা কতবার যে যেতাম এখানে,হিসাবের বাইরে। আমার জন্ম কোচবিহার এই ।  আমার সব আত্মীয় ওখানেই থাকে। কিন্তু ইউবির কর্ম সূত্রে জামশেদপুরে থাকা। তো আমিও এখন জামশেদপুরেই আছি। খুবি সুন্দর একটা শহর।

আমার নাচ শুরু করার ইমোশনাল কাহিনী:-

তো এবার বলছি আমার সম্পর্কে আরো কিছু, যেমন আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা, আমার নাচ শেখা ইত্যাদি ইত্যাদি। আমার ছোটোবেলা কেটেছে আমার দিদিভাই, মা আর আমার সবচেয়ে প্রিয় বাবির সাথেই। বাবির দেশের বাড়ি একচুয়ালি মালদায় ছিল। কিন্তু বাবি জব করতেন ইন্ডিয়ান রেলওয়ে তে। তো উনার পোস্টিং ছিল আলিপুর, কোচবিহার এইসব এরিয়াতেই। তো আমার ছোটোবেলা কেটেছে রেল কোয়ার্টার এ।

বাবি কাজে চলে গেলে মা ই  আমাকে আর দিদিভাইকে দেখে রাখতেন। তারপর বাবির রিটায়ারমেন্ট এর পর আমাদের স্বপ্নের বাড়ি বানানো হয় নিউ কোচবিহারে। ওখানেই তারপর বড়ো হয়ে ওঠা পড়াশুনা সব।

আমার বাড়িতে প্রথম থেকেই সবাই ছিল খুবই কালচারাল। মা খুব সুন্দর গান গাইতে পারেন। বাবি খুব সুন্দর নাটক করতেন। আর আমার দিদিভাই ছিল নাচে জাস্ট অসাধারণ। ওর নাচ স্কুলে লিড রোল পেতো সবসময় ই। দিল্লী, ওড়িশা কত কত জাগায় গিয়ে যে নাচ করে এসেছে। ও আমার রোলে মডেল ছিল সর্বদাই।

তো এমন বাড়ির ছোটো মেয়ে হয়ে আমি কালচারাল দিকে কিছুই করবো না তা কি হয়? যথারীতি আমাকেও নাচে ঢোকানো। কিন্তু দিদিভাইয়ের বিয়ের পর যখন ওর নাচ টা প্রায় বন্ধই হয়ে গেলো, তখন আমার আত্মীয়দের অনেকের ই এটাই প্রশ্ন ছিল যে নাচ যখন এক সময় গিয়ে বন্ধ করতেই হবে তো শিখে কি লাভ। কিন্তু আমার বাড়ির লোক আমাকে শিখিয়েই গিয়েছে কাওকে তোয়াক্কা না করে।

কিন্তু দিদিভাইয়ের বিয়েতে আমি সিঁড়ি থেকে পরে গিয়ে এমন চোট পাই কোমরে যে প্রায় দু বছর আমার নাচ বন্ধ থাকে ডাক্তার এর পরামর্শ অনুযায়ী। ব্যাস, আমার কত্থকে বিশারদ করার স্বপ্ন প্রথম বার আটকে যায়। তারপর আবার নাচ শুরু হলেও সেই বছর এ বাবির আচমকা মৃত্যু তে আমি ঠিক করেই নিয়েছিলাম, অনেক হলো আর নাচ না। লাইফ এ কিছু একটা করতে হবে।

বাবির স্বপ্ন ছিল যে আমার মেয়েরা নিজের লাইফ এ নিজের পা এ নিজে দাঁড়াবে। তো সেই মাফিক আমি অনেক জবের চেষ্টা চালিয়ে যাই। আচ্ছা গল্প করতে করতে এটাই বলা হলো না যে আমি কি নিয়ে পড়েছি। আমার ছোটবেলার অ আ ক খ শেখা সারদা শিশু তীর্থ থেকে। আর তারপর হাই স্কুল মনীন্দ্র নাথ হাই স্কুল থেকে। ইন্টারেষ্টিং বিষয় হলো ইউবি ও এক ই স্কুল থেকে পাসাউট। আমার সিনিয়র। কিন্তু মোটেও আমাদের স্কুলে তেমন কোনো পরিচয় ছিল না। ওর সাথে কিভাবে পরিচয় হলো তা নিয়ে না হয় আরেকদিন লিখবো।

প্রসঙ্গ চেঞ্জ করে লাভ নেই। যাইহোক আমি  গ্রাজুয়েশন  করি এ বি এন সিল কলেজ থেকে আমার প্রিয় সাবজেক্ট বোটানি নিয়ে। তো বাবির স্বপ্ন মতো আমি  অনেক জবের চেষ্টা চালিয়েই যাচ্ছিলাম। কিন্তু বলে না কপালে না থাকলে ঘি ঠোক ঠোকাইলে হবে কি? এগ্রিকালচারাল এক্সাম এ পাশ ও করে যাই, তার পর ও ইন্টারভিউ এ শুধু মাত্র ফ্রেশেরস জন্য আটকে যাই। রেল এর এক্সাম এ পাশ মার্ক্স্ নিয়ে এসেছিলাম কিন্তু গৌহাটি ,মালদা বোর্ড হিসেবে, কিন্তু বড়ো শহর কলকাতা হিসেবে শূন্যপদ ও বেশি ছিলো তাই আমি ওখানেই ভুল কোরে কোলকাতা বোর্ড বেছে নিয়েছিলাম, সেখানে সেটাও মিস করি। জীবন যুদ্ধে পুরোপুরি হেরে গিয়ে আশ্রয় নেই কোচিং সেন্টারে।

তবে এতো খারাপ যখন হচ্ছে লাইফ এ, তার মধ্যে আমার একটাই শুধু মাত্র খুশির বিষয় ছিল ইউবি, ততদিনে ও আমার জীবনে চলে এসেছে। পুরো দিন ফোনে মজার কথা, ঝগড়া সব রকম কিছু ওর সাথে লেগেই থাকতো। আর আমার নাচ? টাটা বাই বাই।

আমি হয়তো অন্য অনেকের মতোই  কোনো দিন ই এটা ভাবি নি যে নাচ আমাকে এতো টা সাফল্য এনে দেবে। নাচ কি কখনো ক্যারিয়ার হতে হতে পারে? এই প্রশ্ন টা কোনো দিনও মাথায় আসে নি। স্বাভাবিক, এইসব কালচারাল দিক গুলো মুখে শুনতেই ভালো লাগে, যে, মেয়ে টার কত টা গুন তা প্রমান করার জন্য। তাই আমার ছেড়ে দেয়া নাচ নিয়ে আমার কোনো রকম মাথা ব্যাথাই ছিল না।

কিন্তু কথায় যাচ্ছে না, সব ভালোর ই খারাপ দিক আছে, তেমনি সব খারাপেরও কিছু ভালো দিক থাকে হয়তো। করোনা যদি না আসতো তাহলে আমার নাচ তো দূরের কথা আমি হয়তো ইউটুব নিয়েও কোনো দিন ভাবতাম না। তো করোনার শুরুর দিকে যখন লকডাউন শুরু হলো তো সবার তখন কালচারাল দিক গুলো বেরিয়ে আসছিলো। তো আমিও তেমনি সারাদিন ঘরে থেকে বোর হয়ে ডিফারেন্ট ডিফারেন্ট আইটেম রান্না করছিলাম। ইউবি আমাকে না জানিয়েই ওর অনেক বছরের পুরোনো একটা চ্যানেলে সব ভিডিও করে আপলোড করছিলো। তো একদিন রবীন্দ্র জয়ন্তী উপলক্ষে একটা নাচ করতে যাই ইউবির জেদে। এতো বছর পরে নাচ কি আর ভালো হয়? তবুও আমি আমার মতো করে একটা নাচ তুলে করে দি, আর ইউবি সেটা ভিডিও করে নেয়, বলে যে নিজের কাছে রাখবে। আমি তখনো জানিনা এটার পেছনে ওর মেইন উদ্দেশ্য ইউটুবে আপলোড করা। আরো যে কি কি আপলোড করতো ও। যা ই কিনতো তার রিভিউ দেওয়া, রান্না করছি সেটার ভিডিও করে নিয়ে আপলোড করা। অথচো আমি জানি ই না যে ইউটুবে আপলোড ও করছে এগুলো। পরে হঠাৎ একদিন বলছে তোমার নাচের ভিডিও টা না ইউটুবে তিন হাজার ভিউস গেছে। আমি শুনে তো অবাক। ভিডিও করছে তো করছেই, আবার আপলোড ও করছে। কিন্তু সেদিন আমরা দুজন ই খুব খুব খুশি হয়েছিলাম। নতুন একটা চ্যানেলে তিন হাজার ভিউস মানে বিশাল ব্যাপার। অন্য কারোর কাছে তো জানিনা, কিন্তু আমার কাছে ছিল এটাই একটা অপুর্চুনিটি, নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার।

যদিও তখন এতো কিছু ভাবিনি। শুধু একটাই জিনিস ভেবেছিলাম, আর যাই হোক থামিয়ে দেয়া যাবে না, এটা চালিয়ে যেতেই হবে। অনেক বাধা এসেছে, একদম ই ভিউস হচ্ছে না, মন ভেঙেছে, তবুও লোরে গেছি। আর তারপর বাকি টা তো ইতিহাস। আজ যখন এটা লিখছি, এই দিন এই আমার চ্যানেলে সাত লক্ষ সাবস্ক্রাইবার পূর্ণ হলো। আর আজ যখন এটা লিখছি ঠিক আজকের দিনেই বাবির মৃত্যু হয়েছিল। খুশি আর মন ভাঙা দু রকম ইমোশন নিয়েই আমার প্রথম ব্লগ লেখা শুরু করলাম। আজ যদি বাবি বেঁচে থাকতেন অবশ্যই হয়তো আমাকে নিয়ে একটু হলেও গর্ব করতেন যে এই হলো আমার মেয়ে। আমার পেছনে বাবির সব রকম খাটনি যে বৃথা যায়নি তা হয়তো বলতেন। পড়াশুনো, নাচ নিয়ে আমার পিছে পরে থাকা আমার মা বাবির দিনগুলো যে বৃথা যায়নি তা নিয়ে খুশি হতেন। নাচ টা যে সামান্য জিনিস নয়, তা নিয়েও হয়তো আমার আত্মীয়দের মুখ বন্ধ করে দিতেন।

আমি জানি, আমার অপ্রিয় সত্যি কথা বলা বাবি কোথাও থেকে দেখছেন, আর ঠিক উনার দুই মেয়েকে নিয়েই গর্ব বোধ করছেন। অনেক ইমোশনাল হয়ে অনেক কিছু লিখলাম, যদি তোমাদের কিচ্ছু টা হলেও ইন্সপিরিশনাল ফীল হয়, তাহলে অবশ্যই আমার এই ব্লগ টি বন্ধু বান্ধব সবার সাথে শেয়ার কোরো। আর আমাকেও আরো ভালো ভালো কিছু লিখতে উৎসাহিত কোরো। আজকের মতো এখানেই বাই। ভালো থেকো, ভালো কোরো, আর ভালো রেখো, আর আমার ইউটুবে ভিডিও গুলো অবশ্যই  দেখো।


16 comments

  1. Ddi tmr life story ta pre khb vlo lglo.. nach chalea jao vlo kre… r ddi tmr r jiju r love story snte chai plzzz🥺… love from Hindmotore- hooghly district,kolkata❤

  2. kV sundor,meyera meyeder oto pochondo kore na karon kV hingshute hoi.kintu ei prothom kono meyer dancer songe tar misti chehara vlo legeche,cheleder comments onek pabe kintu somoboyisi meyer kach theke jokhon kono meyer kach theke jokhon vlo comment pabe ,janbe tokhon tumi success.comments ta kmn laglo janio

  3. Didivai lekhata pore khub valo laglo ❤️🥰dance video r song gulo copyright free kikore pao didivai plz bolo na plz tahole khub upokar tomar 1jon bon r plz .amio YouTube e video upload korar kotha vab6i Tai tumi atuku bolle amar khub upokar hoy divai🥰love from purba Medinipur

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *